০৭:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

  • আপডেট সময়: ০৩:২৬:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫
  • 21

নতুন ইসরায়েলি উচ্ছেদ আদেশের পর রাফা থেকে পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা ৩১ মার্চ গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে পৌঁছয়। ছবি : এএফপি

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে তাদের নতুন হামলা জোরদারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সেখানে ফের জোরপূর্বক উচ্ছেদের আদেশ ঘোষণা করেছে।

সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিখাই আদরেয়ি সোমবার সকালে এক্সে ঘোষণা করেন, সেনাবাহিনী রাফা ও তার আশপাশের এলাকায় ‘অত্যন্ত কঠোরভাবে যুদ্ধ করতে’ ফিরছে। তিনি ফিলিস্তিনিদের তাৎক্ষণিকভাবে উপকূলীয় এলাকা আল-মাওয়াসিতে আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেন। যদিও গাজার ওপর চলমান যুদ্ধে এই এলাকাও বারবার ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে, তা সত্ত্বেও এটিকে একটি ‘নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

উচ্ছেদ আদেশ জারির কিছুক্ষণ পরই আলজাজিরা আরবি জানায়, ওই এলাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুর ওপর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছে।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছিল, জানুয়ারিতে ঘোষিত নাজুক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল ১৮ মার্চ থেকে গাজার ওপর নতুন করে হামলা শুরুর করলে প্রায় এক লাখ ৪২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে শুরু হওয়া বোমাবর্ষণে ইতিমধ্যে প্রায় এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

ওই বছর ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েল গাজার ওপর যুদ্ধ শুরু করে।

শোকের ছায়ায় ঈদ উদযাপন
এদিকে পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তি উপলক্ষে তিন দিনের ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে ফিলিস্তিনিরা, তবে গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলতে থাকায় ঈদও বেদনায় ভরে উঠেছে। ঈদের প্রথম দিন রবিবার অন্তত ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। সোমবার সকালেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

ইসরায়েলি হামলায় আরো অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে।

গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহ থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি জানান, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনী ‘কমপক্ষে সাতটি পরিবারের বাড়িতে’ হামলা চালিয়েছে।

তিনি আরো জানান, গাজা উপত্যকার কেন্দ্রীয় অঞ্চল নুসেইরাত ও নেতজারিম করিডরের খুব কাছাকাছি এলাকায়ও প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। দেইর আল-বালাহতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং সেখানে তিনজন কৃষক নিহত হয়েছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত হানুনে এখন ফিলিস্তিনিরা ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, যেখানে একসময় শিশুদের ঈদের আনন্দে মেতে ওঠার কথা ছিল।

উইসাম নাসার নামের এক ফিলিস্তিনি শিশু আলজাজিরাকে বলে, ‘আমরা সৈকতের কাছেও যেতে ভয় পাচ্ছি, যদি ইসরায়েলি সেনারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

পাশাপাশি হুসেইন আলকাফারনা বলেন, ‘এই ঈদে আমাদের কোনো আনন্দ নেই। আমরা নতুন পোশাকও কিনতে পারছি না, তার ওপর সারাক্ষণ ভয় আর আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে।’

উত্তরাধুনিক

Writer, Singer & Environmentalist

দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

আপডেট সময়: ০৩:২৬:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫

নতুন ইসরায়েলি উচ্ছেদ আদেশের পর রাফা থেকে পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা ৩১ মার্চ গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে পৌঁছয়। ছবি : এএফপি

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে তাদের নতুন হামলা জোরদারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সেখানে ফের জোরপূর্বক উচ্ছেদের আদেশ ঘোষণা করেছে।

সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিখাই আদরেয়ি সোমবার সকালে এক্সে ঘোষণা করেন, সেনাবাহিনী রাফা ও তার আশপাশের এলাকায় ‘অত্যন্ত কঠোরভাবে যুদ্ধ করতে’ ফিরছে। তিনি ফিলিস্তিনিদের তাৎক্ষণিকভাবে উপকূলীয় এলাকা আল-মাওয়াসিতে আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেন। যদিও গাজার ওপর চলমান যুদ্ধে এই এলাকাও বারবার ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে, তা সত্ত্বেও এটিকে একটি ‘নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

উচ্ছেদ আদেশ জারির কিছুক্ষণ পরই আলজাজিরা আরবি জানায়, ওই এলাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুর ওপর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছে।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছিল, জানুয়ারিতে ঘোষিত নাজুক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল ১৮ মার্চ থেকে গাজার ওপর নতুন করে হামলা শুরুর করলে প্রায় এক লাখ ৪২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে শুরু হওয়া বোমাবর্ষণে ইতিমধ্যে প্রায় এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

ওই বছর ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েল গাজার ওপর যুদ্ধ শুরু করে।

শোকের ছায়ায় ঈদ উদযাপন
এদিকে পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তি উপলক্ষে তিন দিনের ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে ফিলিস্তিনিরা, তবে গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলতে থাকায় ঈদও বেদনায় ভরে উঠেছে। ঈদের প্রথম দিন রবিবার অন্তত ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। সোমবার সকালেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

ইসরায়েলি হামলায় আরো অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে।

গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহ থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি জানান, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনী ‘কমপক্ষে সাতটি পরিবারের বাড়িতে’ হামলা চালিয়েছে।

তিনি আরো জানান, গাজা উপত্যকার কেন্দ্রীয় অঞ্চল নুসেইরাত ও নেতজারিম করিডরের খুব কাছাকাছি এলাকায়ও প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। দেইর আল-বালাহতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং সেখানে তিনজন কৃষক নিহত হয়েছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত হানুনে এখন ফিলিস্তিনিরা ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, যেখানে একসময় শিশুদের ঈদের আনন্দে মেতে ওঠার কথা ছিল।

উইসাম নাসার নামের এক ফিলিস্তিনি শিশু আলজাজিরাকে বলে, ‘আমরা সৈকতের কাছেও যেতে ভয় পাচ্ছি, যদি ইসরায়েলি সেনারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

পাশাপাশি হুসেইন আলকাফারনা বলেন, ‘এই ঈদে আমাদের কোনো আনন্দ নেই। আমরা নতুন পোশাকও কিনতে পারছি না, তার ওপর সারাক্ষণ ভয় আর আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে।’